The Tree of Tenere: পৃথিবীর সবথেকে নিঃসঙ্গ গাছের উপখ্যান

The Tree of Tenere: পৃথিবীর সবথেকে নিঃসঙ্গ গাছের উপখ্যান 

সাহারা মরুভূমির এক দুর্গম অঞ্চলে বিগত 300 বছর ধরে একাই দাঁড়িয়ে থাকা The Tree of Tenere হলো পৃথিবীর নিঃসঙ্গতম গাছ।
The Tree of Tenere: পৃথিবীর সবথেকে নিঃসঙ্গ গাছের উপখ্যান
    The Tree of Tenere in 1961 – photo credit Michel Mazeau

ভূমিকা -
নিঃসঙ্গতা কত গভীর হতে পারে তা পরিমাপ করতে গিয়ে আপনি অবাক হবেন যদি Tree of Tenere কথা জেনে থাকেন। বিগত 300 বছর ধরে উষর মরুভূমির এক দুর্গমতম অঞ্চলে একাই দাঁড়িয়েছিল এই গাছটি। আজকে Notepage এর কলমে এই গাছ সম্পর্কে আলোচনা করব। 

অবস্থান ও পরিচয় - উত্তর-পূর্ব নাইজার থেকে পশ্চিম চাড পর্যন্ত সাহারা মরুভূমির এক দুর্গম অঞ্চল Tenere (Tenere – শব্দের আক্ষরিক অর্থ Desert বা মরুভূমি)। এরই একস্থানে অত্যন্ত নিঃসঙ্গভাবে দাঁড়িয়েছিল আমাদের আজকের আলোচিত এই গাছটি। গাছটি মরুভূমির এক প্রকার একাশিয়া বা বাবলা গাছ (বিজ্ঞানসম্মত নাম - Vacheillia Tortilis )। উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা মনে করেন গাছটি যে অঞ্চলে ছিল সেখানে একদা ঐরকম গাছের অনেক জঙ্গল ছিল। কোন প্রাকৃতিক কারণে সেখানে সমস্ত গাছ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। কোন রকমে একটি গাছ নিজেকে টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়।

গাছটি যে অঞ্চলের ছিল তার আশেপাশে 250 মাইল বা 400 কিলোমিটারের মধ্যে আর কোন গাছের চিহ্ন ছিল না। তাই যুগ যুগ ধরে ওই এলাকার মরুভূমির যাত্রী ও তুয়ারেগ ব্যবসায়ীদের কাছে গাছটি ছিল এক ল্যান্ডমার্ক স্বরূপ। তুয়ারেগ লবণ ও খেজুরের ব্যবসায়ীদের পথপ্রদর্শক রূপে গাছটি কাজ করতো। তাই তারা পরম ভক্তি ভরে গাছটির যত্ন নিত এবং খেয়াল রাখত তাদের কোন উট গাছটির পাতা বা কাঁটা খেয়ে ফেলতে না পারে। এভাবেই গাছটি তুয়ারেগদের কাছে এক বিশ্বাসের স্বরূপ হয়ে দাঁড়িয়েছিল জন্ম নিয়েছিল নানা কুসংস্কার ও লোককথার।

The Tree of Tenere in 1939, Image Source - thetreeographer.com

ঐতিহাসিক তথ্যে The Tree of Tenere:- যুগে যুগে অনেক ভ্রমণকারী ও যাত্রীদের বিবরণে এই গাছের নানা বর্ণনা স্থান পেয়েছে। এমনকি 1930 এর দশকে ইউরোপীয় মিলিটারি ক্যাম্পেইনের অফিসিয়াল মানচিত্রে এর উল্লেখ আছে। Henry Loht নামে ফরাসি Ethnologist  তার বিখ্যাত বই ‘Arbre du Tenere’ তে গাছের বিবরণ দিয়েছেন। তিনি দুবার গাছটি পরিদর্শন করেন। প্রথমবার 1934 সালে এবং দ্বিতীয়বার 26 নভেম্বর 1959 সালে। তিনি গাছটির কিছু ক্ষত ও দুর্বলতা দেখতে পান তার ভাষায় – “Before, this tree was green and with flowers; now it is a colourless thorn tree and naked. I cannot recognise it — it had two very distinct trunks. Now there is only one, with a stump on the side, slashed, rather than cut a metre from the soil. What has happened to this unhappy tree? Simply, a lorry going to Bilma has struck it... but it has enough space to avoid it... the taboo, sacred tree, the one which no nomad here would have dared to have hurt with his hand... this tree has been the victim of a mechanic...” 

1939 খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রশক্তির এক কমান্ডার Michel Lesourd এই অঞ্চলে এক অভিযানে গাছটিকে দেখতে পান। তিনি অবাক বিস্ময়ে শত প্রতিকূলতার মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকার কারণ হিসেবে বলেন – “One must see the Tree to believe its existence. What is its secret? How can it still be living in spite of the multitudes of camels which trample at its sides. How at each azalai does not a lost camel eat its leaves and thorns? Why don't the numerous Touareg leading the salt caravans cut its branches to make fires to brew their tea? The only answer is that the tree is taboo and considered as such by the caravaniers. There is a kind of superstition, a tribal order which is always respected. Each year the azalai gather round the Tree before facing the crossing of the Ténéré. The Acacia has become a living lighthouse; it is the first or the last landmark for the azalai leaving Agadez for Bilma, or returning.” 

নির্মম পরিণতি - শত প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা এই গাছ নিজের জীবনকে রক্ষা করলেও মানুষের বোকামির হাত থেকে রেহাই পায়নি। দুই দুইবার গাছটি ট্রাকের আঘাতে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রথমবার 1940 সালে ট্রাকের ধাক্কায় গাছটির একটি শাখা দারুন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই ক্ষতি গাছটির সামনে নিলেও পরেরবার আর পারেনি 1973 সালে 8ই নভেম্বর লিবিয়ার এক মাতাল ড্রাইভার (অভিযোগ করা হয়) ধাক্কা মেরে গাছটিকে ভেঙে ফেলে আর এর সাথেই দীর্ঘ এক নিঃসঙ্গ জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে।

বর্তমান পরিস্থিতি - উষর মরুভূমিতে দীর্ঘদিন একাই দাঁড়িয়ে থেকে এই গাছটি সাধারণের কাছে জীবনের প্রতীক হয়ে ওঠে, দূরবর্তী তুয়ারেগ অধিবাসীদের কাছে মধ্যে গাছটির জন্য ভালোবাসা জন্ম দেয়। তাই ভালোবেসে গাছটি সেই ভাঙ্গা টুকরো গুলি নাইজেরিয়ার জাতীয় মিউজিয়ামে রাখা হয়েছে। এবং গাছটি যেখানে ছিল সেখানেই এক ধাতব কাঠামো বসানো হয়েছে।
Images - Holger Reineccius


তথ্যসূত্র -  Wikipedia  এবং thetreeographer.com

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.